প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে জানুন
প্রতিটি ব্যক্তি চাই তার চুল যেন ঘন ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল থাকে । আমাদের অনেকেরই চুল
নিয়ে অনেক ধরনের সমস্যা থাকে । যেমন, কারো মাথার চুল পড়ে যায় , কারো আবার চুল
একদম পাতলা হয়ে যায় আবার পুরুষদের তো মাথায় একদম টাক পড়ে যায় । অনেকে আছেন
চুল পড়া বন্ধ করার জন্য বাজারের তৈরি পণ্য ক্রয় করার জন্য খুবই আগ্রহী । আবার
অনেকেই আছেন প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে জানার জন্য অনলাইনে
সার্চ করে থাকেন । কিন্তু বাজারে তৈরি কৃত পণ্যগুলো আসল নাকি নকল এবং প্রাকৃতিক
উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না । তাই আমি
আজকে আপনাদের জন্য প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কিত ব্লগ
পোস্টটি নিয়ে হাজির হয়েছি ।
আজকের পোস্টের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় গুলো
মেনে কিভাবে আপনার ঝরে পড়া চুল আবার ফিরিয়ে আনবেন । এছাড়াও আরো যে সকল
বিষয়বস্তু নিয়ে আজকে আলোচনা করব, ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর
উপায়, ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর ঔষধ, কোন ভিটামিন চুল গজাতে
সাহায্য করে, নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে কোনটি, কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজায়, নতুন চুল গজানোর তেল । তাহলে শেষ
পর্যন্ত ব্লগ পোস্টটির সঙ্গেই থাকুন ।
প্রেজ সূচিপত্রঃ নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান, ক্লিক করুন
ভূমিকাঃ প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায়
যত্ন না নিলে কখনোই চুল সুন্দর থাকে না । চুল হচ্ছে মানুষের সৌন্দর্যের একটি অংশ
। বিভিন্ন ধরনের নামিদামি শ্যাম্পু ব্যবহার না করে যদি ঘরোয়া ভাবে প্রাকৃতিক
উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় ব্যবহার করা হয় তাহলে খুব সহজে নতুন চুল গজানোর
সম্ভাবনা রয়েছে । প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় এর মধ্যে একটি হলো
নিয়মিত চুল মাসাজ করতে হবে । নিয়মিত চুলে মাসাজ করার ফলে স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন
অনেকটাই বেড়ে যাবে এতে নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনা বেড়ে যাবে ।
এছাড়াও আপনি প্রতিদিন আপনার মাথায় দেওয়ার জন্য যে তেল ব্যবহার করেন সেই তেলের
সঙ্গে এক চামচ ভিটামিন E মিশিয়ে মাথায় মেসেজ করতে পারেন । এতে করে ফলাফল আরো
ভালো পাওয়া যাবে । ভিটামিন E ক্যাপসুল চুলের প্রয়োজনীয় নিউট্রিশন এর অভাব দূর
করে । এই মিশ্রণটির সাথে পেঁয়াজের রস মেশাতে পারেন । পেঁয়াজের রস নতুন চুল
গজানোর জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান । এই মিশ্রণটি আপনার চুলে ভালোভাবে মালিশ
করুন যাতে এটি চুলের গোড়া পর্যন্ত ভালোভাবে পৌঁছে যায় ।
এভাবে ৫ থেকে ৭ মিনিট ভালোভাবে মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে মাসাজ করুন । তারপর
আপনি যে শ্যাম্পু ব্যবহার করেন সে শ্যাম্পু দিয়ে আপনার চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন
। চুল পড়া বন্ধ করার জন্য এই মিশ্রণটি সপ্তাহে তিন দিন আপনার চুলে ম্যাসাজ করে
ঠিক একইভাবে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে পারেন । একটা জিনিস মনে রাখবেন শ্যাম্পু
প্রতিদিন ব্যবহার করা যাবে না এতে চুলের ক্ষতি হওয়া সম্ভাবনা থাকে । নিচে
প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য তুলে ধরা হলোঃ
- চুলের গোড়ায় সাধারণত ফলিকন নামে একটি উপাদান থাকে । যদি চুল কাপানোর মাধ্যমে বা ভাইব্রেশন এর মাধ্যমে চুলের গোড়ায় ফলিকল উৎপাদিত করা যায় তাহলে মাথায় নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনা রয়েছে । বাজারে ভাইব্রেশন মেশিন পাওয়া যায় । এই মেশিন এর দ্বারা আপনার চুলকে ভাইব্রেশন করতে পারলে নতুন চুল গজাতে পারে । প্রায় ৮ থেকে ১০ মিনিট মাথায় এই ভাইব্রেশন মেশিন দিয়ে মাসাজ করতে পারেন । ভালো ফল পাওয়ার জন্য প্রতিদিন অন্তত দুইবার আপনার মাথায় মাসাজ করতে পারেন ।
- নিয়মিত আপনার চুল পরিষ্কার করুন এবং চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ান ।
- আপনি আপনার চুলে মেহেদি পাতা ও এলোভেরা জেল এর মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন । মেহেদী পাতা ও অ্যালোভেরা জেল প্রাকৃতিকভাবে চুল পড়া বন্ধ করতে বেশ কার্যকরী একটি উপাদান ।
- আপনি আপনার চুলে পেঁয়াজ বাটার রস ব্যবহার করতে পারেন এটি নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে দ্রুত চুল গজাতে অনেকটা সাহায্য করবে ।
- চুলে ভালো তেল বা সরিষার তেল এবং কালোজিরার ব্যবহার । সরিষার তেল এবং কালোজিরা গরম করে নিতে হবে এরপর এই মিশ্রণটি ঠান্ডা করে আপনার চুলে লাগাতে পারেন । এতে চুল পড়া এবং খুশকির সমস্যা দূর হবে ।
- পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে যেমন আপনার শরীরে শক্তি সঞ্চারিত হয় তেমনি চুল পড়াও বন্ধ করা যেতে পারে প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া চুলের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী ।
ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর উপায়
নিজেদের চুল নিয়ে সন্তুষ্ট এমন মানুষ কিন্তু খুব কমই আছেন । স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে
পুরনো চুল ঝরে গিয়ে নতুন চুল গজিয়ে থাকে । তবে মেয়েরা যতটা তাদের নিজেদের
চুলের যত্ন নেন , ছেলেরা কিন্তু তাদের চুলের তার এক ভাগও যত্ন নেন না । চুল পড়ার
অনেক কারণ রয়েছে । মাথার ত্বকের লোমকূপের কোন সমস্যা, চুলের যেকোনো রোগ বা
শরীরের অভ্যন্তরীণ কোন সমস্যা থেকে মাথার চুল পড়ে যায় । যাকে চলতি ভাষায় আমরা
টাক পড়া বলে থাকি । বর্তমানে পুরুষরা এই সমস্যায় বেশি ভুগে থাকেন । ছেলেদের চুল
পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
প্রোটিন
- অনেক সময় খাদ্যাভাসে পরিবর্তন হবে বা শরীরে প্রোটিনের প্রচুর পরিমাণে ঘাটতি দেখা দিলে মাথার চুল পড়ে যায় । তাই খাদ্য তালিকায় নিয়মিত চর্বিযুক্ত, মাংস, মাছ-সহ বিভিন্ন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন ।
- চুল পড়ার সমস্যা সমাধানে চুলের গোড়ায় ভিটামিন E ক্যাপসুল ব্যবহার করুন । ভিটামিন E ক্যাপসুল চুল পড়া বন্ধ করে চুলের স্বাস্থ্য উন্নতি করে ।
- ভিটামিন E মাথার লোমকূপ গুলোতে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় ফলে চুলের ফল নামক এক ধরনের উপাদান যা নিষ্ক্রিয় থেকে সক্রিয় হয়ে ওঠে । এতে চুল পড়া অনেকটা কমে যায় । এছাড়াও ভিটামিন E চুলের স্বাস্থ্যকর রং বজায় রাখে ।
ঘরোয়া উপায়
জল
- অনেক সময় শরীরে জল শূন্যতা দেখা দিলেও চুল পড়া বেড়ে যায় । তাই চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে গেলে আপনাকে বুঝতে হবে যে শরীরে হয়তো পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে । তাই চুল পড়ার সমস্যার সমাধান করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান করতে হবে ।
- প্রতিদিন অন্তত ২.৫ থেকে ৩ লিটার পানি অবশ্যই পান করা উচিত ।
চুলে পেঁয়াজের রসের ব্যবহার
- ঘরোয়া উপায়ে চুল পড়া বন্ধ করতে হলে সর্বপ্রথম যে উপায়টি উঠে আসে তা হলো চুলে পেঁয়াজের রসের ব্যবহার । চুলে পেঁয়াজের রস দিয়ে মাসাজ করে সারা রাত রেখে সকালে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন । এক মাস নিয়মিত এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ফলাফল পাবেন ।
গ্রিন টি
- গ্রিন টি সেবন করার ফলে চুল পড়ার সমস্যা কমে । এক কাপ গরম জলে দুটি গ্রিন টি এর ব্যাগ দিয়ে নিন । এবার এই মিশ্রণটি ঠান্ডা করে চুলের আগা থেকে গুোড়া পর্যন্ত মাসাজ করুন । ঘন্টাখানেক পর চুল ধুয়ে ফেলুন । ১০ থেকে ১৫ দিন টানা এই মিশ্রণটি ব্যবহারে চুল পড়ার সমস্যার সমাধান হবে ।
চুল পরিষ্কার রাখা
সাধারণত মেয়েরা যথেষ্ট পরিমাণ চুলের যত্ন নিয়ে থাকলেও ছেলেরা তার বিন্দুমাত্র
চুলার যত্ন নেয় না । তাই ছেলেদের চুল পড়ার সমস্যা অধিক পরিমাণে বেশি । নিচে এ
সম্পর্কে কয়েকটি টিপস দেওয়া হলোঃ
- নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি । বাইরে যাওয়ার পরে আমাদের ের গোড়ায় যে ময়লা জমে তা নিয়মিত চুল পরিষ্কার করার ফলে সহজেই দূর হয় ফলে চুল পড়া বন্ধ হয় ।
- চুল অপরিষ্কার থাকলে চুলের গোড়ায় খুশকি মাথার ত্বকে সংক্রামক রোগের আশঙ্কা বেড়ে যায় । কখনো ভেজা চুল আছড়াবেন না এবং মাথা ধোয়ার পর অন্তত ১৫ হতে ২০ মিনিট রোদে চুল শুকাবেন ।
- বেশিরভাগ ছেলেরাই হয়তো এই বিষয়টি কখনোই মানেন না । ভেজা অবস্থায় চুলের গোড়া অনেকটা নরম থাকে । ফলে চিরুনি দিয়ে চুল আচড়ানোর সময় চুল উঠে আসার বা চুল পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে ।
স্ক্যাল্প যেন বেশি তৈলাক্ত না হয়
- সব সময় খেয়াল রাখার চেষ্টা করুন মাথার ত্বক যেন খুব বেশি তো লাগত না থাকে ।
- অনেকেরই অতিরিক্ত মাত্রায় মাথা ঘামে । এর ফলে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায় এবং পুরুষদের চুল পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে ।
- এজন্য এলোভেরা ও নিম যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন অথবা ঘরেই প্রাকৃতিকভাবে এলোভেরা মেহেদী ও নিম দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে আপনার চুলে লাগান । তাহলে আপনার মাথা ঠান্ডা থাকবে এবং মাথার চুল এর গোড়া অনেকটা কম ঘামবে ।
ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর ঔষধ
সাধারণত ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর ওষুধ বৈজ্ঞানিকভাবে এখনো তৈরি
হয়নি । মিনোক্সিডিল (Minoxidil) প্রাথমিকভাবে চুলের বৃদ্ধি এবং পুরুষদের মধ্যে
টাকের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এই ওষুধটি মাথার ত্বকের সামনের অংশে চুল
পড়া এবং টাক পড়ার ক্ষতি করে না। এই ওষুধের প্রায় দুই শতাংশ মহিলাদের জন্য
ব্যবহার হয়ে থাকে । যেসব মহিলাদের চুল পাতলা হওয়ার সমস্যা আছে ।এই ওষুধটি ভাসোডিলেটর হিসাবে পরিচিত ওষুধ বিভাগের অধীনে আসে। এটি যখন মুখের
মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়, এই ওষুধটি অ্যান্টিভাইপারটেনসিভ হিসাবে ব্যবহৃত হয় এমনকি এটি উচ্চ রক্তচাপযুক্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্যও ব্যবহৃত হয়। এই ঔষধ ব্যবহার
করার পূর্বে আপনার চিকিৎসকের কাছ থেকে নিম্নলিখিত শারীরিক অবস্থা গুলির বিষয়ে
অবহিত হওয়া উচিতঃ
- আপনি কোনও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বা প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোন ওষুধ, ভেষজ কোন ওষুধ গ্রহণ করছেন বা কোন ডায়েটরি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করছেন।
- এই ওষুধের উপাদান বা অন্য কোনও ওষুধ, খাবার বা পদার্থের থেকে এলার্জি রয়েছে।
- আপনি যদি গর্ভবতী হন, বা গর্ভবতী হওয়ার পরিকল্পনা করছেন বা একটি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন।
- আপনার হার্ট, কিডনি, লিভার বা মস্তিষ্কের ত্বক সম্পর্কিত কোনও রোগ রয়েছে।
- আপনি রোদের মধ্যে কোন কাজ করছেন যার ফলে ত্বকের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি হতে পারে।
তাই বলা যায় যে এই ওষুধ সেবনের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত । আপনার
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে বা ওষুধের প্যাকেটের উপর যেভাবে নির্দেশাবলী দেওয়া আছে
আপনি সেইভাবে ওষুধটি ব্যবহার করবেন। এই ওষুধটি কমপক্ষে ৪ মাস ব্যবহার করার পরে
এই ওষুধের ফলাফল দেখতে পেতে পারেন ।
কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে
প্রিয় পাঠক আপনারা লক্ষ্য করলে দেখবেন ওপরে আমরা ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও নতুন
চুল গজানোর ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করলাম । এখন আমরা কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য
করে সে সম্পর্কে আলোচনা করব । চুলের বৃদ্ধিতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এমন
বেশ কিছু ভিটামিন রয়েছে । এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন সম্পর্কে নিচে আলোচনা
করা হলোঃ
ভিটামিন B
- B1 (থায়ামিন): চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- B2 (রিবোফ্লাভিন): চুলের ক্ষতি রোধ করে।
- B3 (নিয়াসিন): চুলের গোড়া শক্ত করে।
- B5 (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড): চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে।
- B6 (পাইরিডক্সিন): চুলের রঙ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- B7 (বায়োটিন): চুল পড়া রোধ করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
- B12: চুলের কোষ গঠনে সাহায্য করে।
ভিটামিন A
- চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
ভিটামিন C
- চুলের ক্ষতি রোধ করে।
- চুলের গোড়া শক্ত করে।
ভিটামিন D
- নতুন চুলের কোষ গঠনে সাহায্য করে।
- চুল পড়া রোধ করে।
ভিটামিন E
- চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- চুলের ক্ষতি রোধ করে।
- চুলকে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে।
নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে কোনটি
প্রতিদিন আমাদের মাথা থেকে অনেকগুলো চুল ঝরে পড়ে যায় আসলে এই চুল ঝরে পড়ার
কারণ হচ্ছে চুলের পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টির অভাব। যখন দেখি আমাদের মাথার
অতিরিক্ত চুল পড়ে যাচ্ছে তখন আমরা নতুন চুল গজানোর জন্য অনেক নামি দামি
ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু তেল ও পার্লারে গিয়ে ট্রিটমেন্ট নিয়ে থাকি । কিন্তু তাও
চুল পড়ার সমস্যার কোন সমাধান আসে না । তাহলে চলুন নিচে নতুন চুল গজাতে সাহায্য
করে কোনটি এমন কয়েকটি বিষয় নিয়ে কথা বলি,
- মেথি আমরা সবাই জানি মেথি আমাদের চুলের জন্য কতটা উপকারী । এই উপকারী মেথিতে রয়েছে অ্যান্টি ফাঙ্গাস যা আমাদের চুলের গোড়ায় খুশকি এবং বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে । মাথায় বিভিন্ন ধরনের চুলকানি এবং এলার্জির সমস্যা দূর করে দেয় এবং তার সাথে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে ।
- আমলকি চুলের জন্য আমলকির রয়েছে অনেক গুণ ও বিশেষ ভূমিকা । আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C ও খনিজ । যা আমাদের মাথার রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে । আমরা যেমন আমাদের ত্বকের যত্নের জন্য অনেক ভাবি ঠিক তেমনি আমাদের চুলের যত্নের জন্য আমাদেরকে একটু ভাবতে হবে । চুলের যত্নে আমরা কি ব্যবহার করলে চুল অতিদ্রুত লম্বা হয় ।
- নিম পাতা নিমপাতা আমাদের সবার কাছে একটি পরিচিত জিনিস । চুলের যত্নে নিম পাতার রয়েছে বিশেষ ভূমিকা । নিমপাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে তারপর সেই পানি ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করে চুলে ব্যবহারের ফলে অনেক উপকার পাওয়া যায় । তবে নিয়মিত গোসলের পর এটি স্প্রে মেশিন দিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারলে বেশ সুফল পাওয়া সম্ভব ।
- জবা ফুল আপনি যদি প্রতিদিন নারকেল তেলের সাথে জবা ফুল বেটে একটি মিশ্রণ তৈরি করে গোসলের ২০ থেকে ২৫ মিনিট পূর্বে মাথায় লাগিয়ে রাখেন তাহলে এটি আপনার চুলের খুশকি এবং চুল পড়া দুটি দূর করবে এবং নতুন চুল গজাবে ।
- পেঁয়াজের রস আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী পেঁয়াজের রসে থাকে একটি ঝাঁঝালো ফ্লেভার এটি আমাদের চুল পড়া কমিয়ে দেয় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে আপনি যদি সপ্তাহে তিন দিন পেঁয়াজের রস আপনার চুলের ব্যবহার করে মাসাজ করতে পারেন তাহলে দ্রুত নতুন চুল গজাতে এই মিশ্রণটি সহায়তা করবে ।
কত বছর বয়স পর্যন্ত চুল গজায়
চুলের বৃদ্ধি মানুষের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন হারে হয়ে থাকে ।
সাধারণত একজন মানুষের শৈশব থেকে যৌবন পর্যন্ত চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হারে হয়,
তারপরে ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে । এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, বেশিরভাগ মানুষের
ক্ষেত্রে 30 থেকে 35 বছর বয়স পর্যন্ত চুলের বৃদ্ধি হয় এরপরে চুলের বৃদ্ধির
হার কমতে শুরু করে । অবশ্য এটি ব্যক্তি বিশেষে বা বংশগতভাবে ভিন্ন হতে পারে ।
সাধারণত চুলের বৃদ্ধি মূলত তিনটি পর্যায়ে হয়ঃ
- Anagen phase: এটি চুলের সক্রিয় বৃদ্ধির পর্যায়। এই সময় চুল প্রতিমাসে প্রায় ১ সেন্টিমিটার হারে বাড়ে। এই পর্যায় ৩-৫ বছর পর্যন্ত চলতে পারে।
- Catagen phase: এটি একটি সংক্রমণকালীন পর্যায় যা ২-৩ সপ্তাহ স্থায়ী হয়। এই সময় চুলের বৃদ্ধি থেমে যায়।
- Telogen phase: এটি চুলের বিশ্রামের পর্যায়। এই সময় পুরনো চুল ঝরে পড়ে এবং নতুন চুল গজাতে শুরু করে। এই পর্যায় ৩-৪ মাস স্থায়ী হয়।
নতুন চুল গজানোর তেল
চুল পড়ার সমস্যা ছোট থেকে বড় প্রায় সব মানুষেরই রয়েছে । প্রতিদিন আমাদের
অনেক চুল ঝরে পড়ে এই সমস্যা থেকে মুক্তি লাভের জন্য হয়তো অনেকে অনেক রকম
ব্র্যান্ডের তেল শ্যাম্পু ব্যবহার করে কিন্তু তেমন কোন সমাধান পাওয়া যায় না ।
তাহলে আসুন নতুন চুল গজানোর তেল সম্পর্কে ও প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জেনে
নেই ।
চুল পড়া রোধের জন্য কিছু প্রধান তেল গুলো হলোঃ
- জৈবানিক তেল যেমন, জলের নারিকেল তেল, অ্যালোভেরা, কাস্টর তেল ইত্যাদি। এগুলো চুলের ফলিতভুক্ত এবং সহজে চুলের গোড়ায় প্রবেশ করে চুলের নারীকতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- মিনারেল তেলগুলো যেমন, প্যারাফিন তেল ও মেথিলেন তেল ইত্যাদি। এগুলো চুলের ফলিতভুক্ত নয় কিন্তু চুলের গোড়া অব্দি গিয়ে চুলের সাথে অবিবাহিত থাকে।
নতুন চুল গজানোর তেল বা নতুন চুল গজানোর জন্য কিছু প্রধান তেল গুলো হলোঃ
- জলের নারিকেল তেল এবং জলের নারিকেল মিল্ক। এগুলো চুলে প্রোটিন এবং ভিটামিন E সরবরাহ করে এবং চুলের নারীকতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই তেল চুলকে সিল্কি করতে সহায়তা করে ।
- অলিভ তেল (Olive Oil): অলিভ তেলে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের গোড়া মজবুত রাখে এবং অতি দ্রুত নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে ।
- আর্গান তেল (Argan Oil): আর্গান তেল চুলের শুষ্কতা দূর করে এবং চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে । এছাড়াও এটি চুলকে সিল্কি ও মজবুত করতে সহায়তা করে ।
- ক্যাস্টর অয়েলঃ ক্যাস্টর অয়েল স্ক্যাল্পে ভালোমতো ম্যাসাজ করলে এটি স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের গোড়া অব্দি গিয়ে চুলকে মজবুত করে । স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন যত বাড়বে এর অবস্থা তত উন্নত হবে ফলে দ্রুত নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে ।
লেখকের শেষ কথা
চুল নিয়ে আমাদের অনেকের অনেক রকমের সমস্যা ও মন্তব্য রয়েছে । আশা করি আজকের
এই ব্লগ পোস্টেটির মাধ্যমে আপনারা প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে
সঠিক সমাধান পেয়ে গেছেন । অবশ্যই আপনাকে চুলের যত্নে প্রোটিন সমৃদ্ধ ও ভিটামিন
যুক্ত খাবার খেতে হবে এছাড়াও সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন মেথি, অ্যালোভেরা জেল ও
নিমপাতা এর পেস্ট চুলে ব্যবহার করতে হবে । অবশ্যই চেষ্টা করবেন চুলের যত্নে সব
সময় প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় বা ঘরোয়া উপায় ফলো করার জন্য ।
আজকের এই ব্লগ পোস্টটি যদি আপনি পড়ে উপকৃত হন তাহলে এই পোস্টটি আপনার
বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন এবং তাদেরকেও নিজের চুলের যত্ন নেওয়ার
পরামর্শ দেবেন এবং প্রাকৃতিক উপায়ে নতুন চুল গজানোর উপায় সম্পর্কে জানিয়ে
দেবেন । এইরকম স্বাস্থ্য সেবা মূলক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন
ভিজিট করতে পারেন । এছাড়াও চুল সম্পর্কে আপনাদের যদি কোন কিছু জানার থাকে বা
আপনাদের যদি আমাকে কোন পরামর্শ দেওয়ার থাকে তাহলে মন্তব্য বক্সে কমেন্ট করে
জানাতে পারেন ধন্যবাদ ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url