৮টি ঘরোয়া ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত

আপনি কি অতিরিক্ত ঠোঁট ফাটা নিয়ে চিন্তিত? ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের এই ব্লগ পোস্টটি আপনার জন্য । শীতকালে কম বেশি সবারই ঠোঁট ফেটে থাকে । কিন্তু ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় কি তা আমরা অনেকেই জানিনা । আপনারা বিভিন্ন সময় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে সার্চ করে থাকেন যে ঘরোয়া ভাবে ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে । কিন্তু সঠিক তথ্যের অভাবে এবং সঠিক পরামর্শের অভাবে আপনারা পার্মানেন্টলি ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে পারেন না ।
প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টটিতে ঘরোয়া ভাবে ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানার সাথে আপনি আরো যেই বিষয়গুলি জানতে পারবেন তা হলো, ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে, ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার প্রতিকার, ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া কোন রোগের লক্ষণ, ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায়, মেয়েদের ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার ক্রিম, ছেলেদের ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায় এছাড়াও ঠোঁট গোলাপি করার উপায় এবং ঘরোয়া ভাবে ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায়  সম্পর্কে । তাহলে ঘরোয়া ভাবে ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে শেষ পর্যন্ত আজকের ব্লগ পোস্টটির সাথেই থাকুন ।

পেজ সূচিপত্রঃ নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান, ক্লিক করুন 

ভূমিকাঃ ঘরোয়া ভাবে ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায়

শীতকালে ঠোঁট ফেটে যাওয়ার মূল কারণ হলো শীতকালীন শুষ্ক আবহাওয়া । আমাদের শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় ঠোঁটের চামড়া অনেক বেশি পাতলা এবং নাজুক হয়ে থাকে । যার কারণে শীতকালে বাতাসে যখন জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যায় এবং বাতায় যখন শুষ্ক হয়ে যায় তখন ঠোঁট শুকিয়ে ফেটে যায় । শীতকালে অনেকেই ঠোঁট ফাটার সমস্যায় ভোগে থাকেন । শুধু ঠোঁটই নয় বরং শীতকালে হাত, পা এমনকি ত্বকও ফেটে যায় । 

মাঝে মাঝে তো ঠোঁট ফেটে রক্তপাতও ঘটে । কারণ শীতকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক কম থাকে ফলে ত্বক রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে পড়ে । এর ফলে আমাদের শরীরের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায় । তাই শীতকালে ত্বকের এবং ঠোঁটের আলাদাভাবে যত্ন নিতে হয় । এ সময় আপনার ঠোঁটে বা ত্বকে  গ্লিসারিন অথবা নারকেল তেল ব্যবহার করুন । সবচেয়ে ভালো হয় ঠোঁটে লিপবাম ব্যবহার করলে । শীতকালে অতিরিক্ত মাত্রায় ঠোঁট ফাটার রয়েছে একাধিক কারণ ।  

শীতকালে বাতাসের জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে আমাদের ঘাম তুলনামূলক কম হয় যার ফলে আমাদের দেহে থাকা সিবেসিয়াস নামক উপাদান ঘাম গ্রন্থি থেকে বেরিয়ে পারেনা এবং এই পদার্থ আমাদের শরীরে ছরাতে পারে না এজন্য আমাদের ত্বক ও ঠোঁট শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যায় । যেহেতু আমাদের ঠোঁট শরীরের অন্য যে কোন অংশের তুলনায় অনেক বেশি পাতলা ও নাজুক হয়ে থাকে তাই শীত আসার পূর্বেই ঠোঁট ফাটা শুরু হয়ে যায় । এই সকল কারণ ছাড়াও ঠোঁট ফেটে যাওয়ার আরো কিছু কারণ রয়েছে, 
  • শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ।
  • ঠোঁটের ঠিকভাবে যত্ন না নেওয়া ।
  • ঠোঁটে সময় মত ভেসলিন অথবা লিফজেল বা লিপবাম ব্যবহার না করা ।
  • এর অপরিভাগের চামড়া বাতাসের সংস্পর্শে এসে পাতলা হওয়ার কারণে ফেটে যাওয়া ।
  • শরীরে ভিটামিন বি এর অভাব থাকলে ঠোঁট ফেটে যায় ইত্যাদি ।

ঘরোয়া ভাবে ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায়

আপনি কি ঠোঁট ফাটা নিয়ে চিন্তিত? ঠোঁট ফেটে গেলে যেমন দেখতে খারাপ লাগে তেমনি সব সময় ঠোঁটে জ্বালাপোড়া করে এমনকি খাওয়া-দাওয়ার সময় তো অস্বস্তিকর জ্বালাপোড়া হয় । প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে কয়েকটি ঘরোয়া ভাবে ঠোট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব । তাহলে নিচে ঘরোয়া ভাবে ঠোঁট ফাটা কমানোর কয়েকটি উপায় সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক । 

পানি পান করতে হবে

আপনি নিশ্চয় জেনে থাকবেন যে মানব শরীরের ৩ ভাগের মধ্যে ২ ভাগ হয় পানি দ্বারা গঠিত । আমাদের শরীরে তাই পানির গুরুত্ব অপরিসীম । পানি ছাড়া আমাদের মানব শরীর সম্পূর্ণ অচল । প্রতিদিন একজন মানুষের গড়ে তিন থেকে সাড়ে চার লিটার পানি পান করা প্রয়োজন । শীতকালে আমাদের ঠোঁট যেমন শুষ্ক জলীয় বাষ্পের কারণে ফেটে যায় তেমনি শরীরে পানি শূন্যতা বা পানির অভাব দেখা দিলেও ঠোঁট দ্রুত ফেটে যায় । এজন্য ঠোঁট ফাটা দূর করতে অবশ্যই সঠিক মাত্রায় পানি পান করতে হবে ।

ঠোঁটে নারকেল তেল অথবা ভেসলিন ব্যবহার করতে হবে

শীতকালে ঠোঁটফাটা একটি কমন বিষয় হয়ে গিয়েছে । এই ঠোঁটফাটা কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ঠোঁটে নারকেল তেল অথবা ভেসলিন ব্যবহার করতে হবে । প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে ঠোঁটে নারিকেল তেল এবং ভেসলিন এর একটি মিশ্রণ তৈরি করে ঠোঁটে লাগাবেন । এতে করে ঠোঁট নরম থাকবে এবং ঠোঁট ফাটার সমস্যা দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে ।

ভিটামিন B ও C জাতীয় খাবার গ্রহণ

আমরা মনে করি যে শীতকালে হয়তোবা শুষ্ক আবহওয়ার কারণে ঠোঁট ফেটে যায় । এটা মনে করা অনেকটাই স্বাভাবিক বিষয় । তবে যাদের সারা বছরে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দেখা দেয় তাদের এই ঠোঁট ফাটার অন্যতম একটি কারণ হলো শরীরে অধিক পরিমাণে ভিটামিন B ও ভিটামিন C এর ঘাটতি । যখন একজন মানুষের শরীরে ভিটামিন B ও ভিটামিন C এর অভাব দেখা দেয় তখন তার পায়ের গোড়ালি ফেটে যায় যা পরবর্তী সময় মারাত্মক আকার ধারণ করে । তাই শীতকালে ঠোঁটফাটার সমস্যা দূরে রাখতে নিয়মিত ভিটামিন C ও ভিটামিন B সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে ।

মধু ও অলিভ অয়েল

মধু প্রাকৃতিক মশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং শীতকালে ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করতে সহায়তা করে । অন্যদিকে অলিভ অয়েল ত্বকে গভীর আর্দ্রতা যোগায় এবং ত্বককে নরম রাখে । একটি ছোট পাত্রে মধু এবং অলিভ অয়েল এর মিশ্রণটি ঠোঁটে লাগালে শুষ্ক মৌসুমেও ঠোঁট নরম থাকবে ।

ভিটামিন E তেল

ভিটামিন E তেল বা ভিটামিন E ক্যাপসুল সুস্থতা এবং ফাটা কমাতে এবং ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে । ভিটামিন E ত্বককে হাইড্রেট করে এবং ত্বকের পুনর্গঠন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে ।

হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যবহার

হাইড্রোজেন পার অক্সাইড মাউথওয়াশ ব্যবহার করার ফলে সারাদিন আপনার মুখ ফ্রেশ থাকবে । এছাড়াও মুখের দুর্গন্ধ দূর হওয়ার সাথে ঠোঁট ফাটার সমস্যাও দূর হবে । এজন্য নিয়মিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড মাউথওয়াশ সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ব্যবহার করতে হবে এটি আপনার ঠোঁটের জন্য বেশ উপকারী হবে ।

ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে

প্রিয় পাঠক আপনারা লক্ষ্য করলেই দেখবেন ওপরে আমরা ঘরোয়া ভাবে ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবার ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব । আমাদের শরীরের যেকোনো অংশের চেয়ে ঠোঁটের ত্বক খুবই নমনীয় এবং খুব স্বল্প সময়েই শুষ্ক হয়ে ফেটে যায় । শীতের বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ায় শুষ্কতা অনেকটাই বেড়ে যায় এবং এই শুষ্কতার ফলেই আমাদের ত্বক এবং ঠোঁটের মত নমনীয় অংশগুলো ফেটে যায় । তবে এর একমাত্র কারণ শীতকালীন শুষ্ক আবহাওয়া নয় । শরীরে কিছু বিশেষ ভিটামিনের অভাবেও ঠোঁট ফেটে যায় । তাই ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে চলুন জেনে নেওয়া যাক, 
ভিটামিন B2 (রিবোফ্লাভিন) এর অভাব
  • ভিটামিন B2 এর অভাবে ঠোঁটের কোনে দাগ তৈরি হতে পারে । ভিটামিন B2 এর অভাব ঠোঁট ফাটা এবং ঠোঁটকে শুষ্ক করে তোলার জন্য দায়ী ।
ভিটামিন B3 (নিয়াসিন)
  • ভিটামিন B3 এর অভাবে ঠোঁটে শুষ্কতা দেখা দেয় । এছাড়াও লালচে ভাব এবং ঠোট ফাটা দেখা দিতে পারে । ভিটামিন B3 এর ঘাটতি আরও বড় সমস্যার কারণ হতে পারে যেমন, অ্যান্ট্রোপ্যাথি বা  (পেলাগ্রা )।
ভিটামিন A
  • এই ভিটামিন আমাদের ত্বকের নমনীয় অংশের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে । ভিটামিন A এর অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে এবং রক্তপাত পর্যন্ত হতে পারে ।
ভিটামিন C
  • এই ভিটামিন ত্বকের পুনর্গঠন এবং ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । ভিটামিন C এর অভাবে দ্রুত ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে, সেই সঙ্গে অল্প বয়সেই ত্বক বা চামড়া কুঁচকে যেতে পারে ।

ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার প্রতিকার

শীতের সময় ঠোঁট ফাটা একটি স্বাভাবিক বিষয় । এ সময় আবহাওয়ার শুষ্কতার কারণে ঠোঁট শুকিয়ে যায় । কিন্তু শীতে ঠোট শুকিয়ে যাওয়ার প্রতিকার রয়েছে । প্রিয় বন্ধুগণ ওপরে আমরা ঠোঁট ফাটে কোন ভিটামিনের অভাবে সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি এবার ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার প্রতিকার সম্পর্কে কিছু তথ্য আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব । তাহলে চলুন নিচে কয়েকটি ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ।

চিনির স্ক্রাব

ঠোঁট অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়ে ঠোঁটের মরা কোষের কারণে । এক্ষেত্রে চিনির স্ক্রাব আপনাকে সাহায্য করবে ঠোঁটের মরা চামড়া তুলতে । এই উপাদানটি তৈরি করতে আপনি লেবু দু'ভাগ করে কেটে নিন এবার দু'ভাগ করে কাটা অর্ধেক লেবুর উপর কিছু পরিমাণ চিনি নিয়ে আপনার ঠোটের উপরে ম্যাসাজ করুন । আপনার যদি এলার্জিজনিত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে লেবুর পরিবর্তে মধুর সঙ্গেও চিনি মিশিয়ে ঠোঁটে ম্যাসাজ করতে পারেন । এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে পেট্রোলিয়াম জেলি বা লিপবাম লাগাতে পারেন । এভাবে সপ্তাহে অন্তত তিনদিন ম্যাসাজ করলে ঠোট ফাটার সমস্যার দ্রুত সমাধান পাবেন ।

দুধ

দুধ যেমন আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে তেমনি ত্বকের নমনীয় অংশের জন্য দুধ খুবই উপকারি একটি উপাদান । দুধ প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে থাকে । প্রতিদিন এক চা চামচ কাঁচা দুধ নিন এবং আপনার ঠোঁটে লাগিয়ে ১৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন । এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন । নিয়মিত এই পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে ঠোট হবে নরম ও উজ্জ্বল ।

মধু

ঠোঁটের সুস্থতাই  মধু একটি অত্যন্ত উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান । প্রতিদিন ঠোঁটে মধু এবং ভেসলিনের সংমিশ্রণে একটি টোটকা তৈরি করে ঠোঁটে লাগাতে পারেন। এতে ঠোঁটের রুক্ষতা দূর করার সাথে ঠোঁটকে নরম ও ঠোঁটে আদ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে । মধুকে প্রাকৃতিক ময়শ্চেরাইজার ক্রিম হিসেবেও প্রাধান্য দেওয়া হয় । 

গ্লিসারিন

ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন ঠোটে গ্লিসারিন ব্যবহার করুন । প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ঠোঁটে গ্লিসারিন দিয়ে মাসাজ করতে পারেন । পরবর্তীতে সকালে উঠে নিজেই এর ফলাফল দেখতে পাবেন ।

নারিকেল তেল

ত্বকে শুষ্কতা দূর করতে নারিকেল তেল অনেক ভালো কাজ করে । এতে রয়েছে আদ্রতা ধরে রাখার উপাদান এবং এটি ত্বককে এবং আপনার ঠোঁটকে নমনীয় রাখতে সহায়তা করে । ফলে এটি ব্যবহারে ঠোঁটের শুষ্কতা দূর হয় পাশাপাশি ঠোঁট নরম ও মসৃণ হয় । নারিকেল তেল অ্যান্টিসেপটিক হিসেবেও ফাটা ঠোঁটের সমস্যার সমাধান করে ।

ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া কোন রোগের লক্ষণ

শীতকালে আদ্র জলীয় বাষ্পের কারণে এবং সঠিক পরিমাণ আদ্রতার অভাবে এমনিতেই ঠোঁট ফেটে শুকিয়ে যায় । শুধু কি তাই? ঠোট শুকিয়ে যাওয়া হতে পারে যে কোন রোগের লক্ষণ । প্রিয় পাঠক চলুন ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া কোন রোগের লক্ষণ এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক । ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া ডায়াবেটিসের অন্যতম লক্ষণ । আপনার কি শীতে সারাদিনই ঠোঁট শুষ্ক হয়ে থাকে? 

ক্রিম জাতীয় কিছু ব্যবহার করার কিছুক্ষণ পরে আবার সেই একই অবস্থায় ফিরে আসে? তাহলে হ্যাঁ এই ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া হচ্ছে ডায়াবেটিসের অন্যতম একটি লক্ষণ । সেই সঙ্গে পায় প্রবল তেষ্টা । তবে ডায়াবিটিসের কারণে মূলত সকালের দিকে বেশ ভাল রকম শুকিয়ে যায় ঠোঁট। এমন যদি শীতকাল বাদেও বছরের প্রায় সময়েই হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরী ।

ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায়

প্রিয় বন্ধুগণ আপনারা অনেকেই হয়তোবা মনে করে থাকেন যে একবার ঠোঁট কালচে হয়ে গেলে বা ঠোঁটে যদি জন্মগত কালচে কালার থাকে তাহলে এটি আগের স্বাভাবিক রঙে ফিরিয়ে আনা বেশ কঠিন ও খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার । কিন্তু আপনি কি জানেন যে ঘরোয়া ভাবে ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায় রয়েছে । তায় নিচে আমরা ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই । 

দুধ বা টক দই

ঠোঁটে দুধ বা টক দই মাখুন । ত্বককে উজ্জ্বল করতে ল্যাকটিক অ্যাসিড খুবই উপকারী । দুধ বা টক দইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ল্যাকটিক অ্যাসিড । প্রথমে দুধ অথবা টক দই অল্প পরিমাণে তুলাই ভরিয়ে নিয়ে মাসাজ করুন । এতে আপনার ঠোঁট দ্রুত উজ্জ্বল হবে ।

লেবুর রস ও চিনি

আপনার ঠোঁটে লেবু আর চিনি লাগান । প্রথমে এক টুকরো লেবু কেটে অর্ধেক লেবুর উপরে কিছু পরিমাণে চিনি নিন এবং আস্তে আস্তে আপনার ঠোঁটের উপরে ম্যাসাজ করুন । আলতো হাতে প্রায় দুই মিনিট মেসেজ করার ফলে আপনার ঠোঁট ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হতে শুরু করবে । চিনি এখানে স্ক্র্যাবারের কাজ করে । চিনি ঠোঁটের মরা কোষ গুলোকে তুলে দিতে সহায়তা করবে আর লেবু ঠোঁটের কালো হয়ে যাওয়া ত্বককে কে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে । নিয়মিত এই টোটকাটি ব্যবহার করলে আপনার ঠোঁট দ্রুত উজ্জ্বল হয়ে উঠবে ।

টমেটোর রস

ঠোঁটকে উজ্জ্বল করার জন্য টমেটোর রস ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন অন্তত দুবার করে টমেটোর রস ঠোঁটে ম্যাসাজ করুন। এতে আপনার ঠোঁট উজ্জ্বল হবে।

গোলাপ জল ও অলিভ অয়েল

প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে গোলাপ জল অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে দুই থেকে তিন মিনিট ম্যাসাজ করুন এতে ভালো ফলাফল পাবেন । নিয়মিত সাত দিন ম্যাসাজ করলেই পার্থক্য আপনার চোখে পড়বে ।

মধু, চিনি আর বাদামের তেল

মধু, চিনি এবং বাদামের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে একটি টোটকা বানিয়ে নিন । এবারে মিশ্রণটি প্রতিদিন ঠোঁটে মালিশ করুন । এতে করে ঠোঁটের যে সুস্থ এবং মরা কোষগুলো রয়েছে সেগুলো বাদামের তেলের ফলে আবারও জীবিত হয়ে উঠবে এবং মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করবে ।

মেয়েদের ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার ক্রিম

শীত অথবা গরম কালে আমাদের অনেকের ঠোঁট ফাটা বা ঠোটে কালচে ভাব দেখা দেয় । শীতকালে কমবেশি এই সমস্যাটি সবারই দেখা দেয় । তাই ঠোঁটের যত্ন নিতে হবে সব ঋতুতেই । আপনারা ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক কিছু লিখে সার্চ করেন এবং মেয়েদের ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার ক্রিম খোঁজেন । কিন্তু সঠিক তথ্যের অভাবে সঠিক ক্রিম কোনটি তা খোঁজা একটু কঠিন মনে হয় । তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে মেয়েদের ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার ক্রিম সম্পর্কে একটি পূর্ণ তালিকা সম্পর্কে জানাব । নিচে মেয়েদের ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার ক্রিম এর কিছু তালিকা তুলে ধরা হলোঃ

ইফেক্টিভ লিপ কেয়ার Scru লিপ ক্রিম

  • ব্র্যান্ডের নাম: VIBRANT গ্ল্যামার
  • ব্যবহার: ঠোঁট
  • বৈশিষ্ট্য: লিপ স্ক্রাব এক্সফোলিয়েটার
  • উপাদান: হং জেল, হায়ালুরোনিক এসিড
  • প্রকার: ঠোঁট স্ক্রাব
  • ওজন: ১২ গ্রাম
  • এটি ব্যবহারে ঠোঁট গোলাপি হবে

Laneige লিপ স্লিপিং মাস্ক (20 gm)

  • প্রোডাক্ট টাইপ: লিপ স্লিপিং মাস্ক
  • ব্র্যান্ড: Laneige
  • ওজন: 20 gm

Wnpl সফট প্রিমিয়াম লিপ বাম সেট (7 gm x 6 pcs) (র‍্যান্ডম কালার)

  • প্রোডাক্ট টাইপ: লিপবাম
  • ব্র্যান্ড: Wnpl
  • ওজন: 7 gm
  • পরিমান: 6 pcs
  • ঠোটের রিংকেল দূর করে
  • আপনার ঠোঁটকে নরম ও মসৃণ করবে

Laikou সাকুরা লিপ মাস্ক (8 gm)

  • ব্র্যান্ড: Laikou
  • শেলফ লাইফ: 3 বছর
  • বৈশিষ্ট্য: ঠোঁটের আর্দ্রতা লক করতে সাহায্যে করে
  • লিপ কেয়ার সুইট হানি ফ্লেভার লং লাস্টিং ইউজ লিপবাম
  • প্রোডাক্ট টাইপ: লিপবাম
  • ওজন: ৪ মি.লি.
  • পরিমান: ১ পিস
  • লং লাস্টিং ইউজ
  • ন্যাচারাল বিউটিফুল লিপস
  • আপনার ঠোঁটকে নরম ও মসৃণ করবে

NIVEA লং লাস্টিং ময়েশ্চারাইজার কেয়ার লিপবাম (৫.৫ মি.লি.)

  • প্রোডাক্ট টাইপ: লিপবাম
  • ব্র্যান্ড: NEVIA
  • পরিমাণ: ৫.৫ মি.লি.
  • লং লাস্টিং ইউজ

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমরা আজকের এই পোস্টটির মাধ্যমে ঘরোয়াভাবে ঠোঁটফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম । শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়া এবং অতি শুষ্ক জলীয়বাষ্পের কারণে আমাদের ঠোঁট ফেটে যায় । এসময় আলাদাভাবে ঠোঁটের যত্ন নিতে হয় । এছাড়াও আমাদের ঠোঁটের ওপরিভাগ অংশ অনেকাংশে ত্বকের অন্য অংশের চেয়ে পাতলা হওয়ার ফলে শীতকালে ঠোঁট বেশি ফেটে থাকে । তবে এ সমস্যাটি যদি আপনার বছরে যেকোনো সময় হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে । 

আজকের এই ব্লগ পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং ঘরোয়া ভাবে ঠোঁকাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে যদি আপনি সঠিক তথ্যটি জানতে পারেন তাহলে এই পোস্টটি অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন এবং তাদেরকেও ঠোট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানাবেন । প্রিয় বন্ধুরা কি ভাবে ঠোঁট ফাটা কমানোর উপায় সম্পর্কে যদি আপনাদের আরো বিস্তারিত কিছু তথ্য জানান থাকে বা আমাদেরকে কোন পরামর্শ দেওয়ার থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মন্তব্য করে জানাতে ভুলবেন না ধন্যবাদ ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url