ফাইভারে সফলভাবে কাজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
ফাইভারে সফলভাবে কাজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আমাদের আজকের এই
আর্টিকেলটি ৷ আমরা সবাই কমবেশি জানি যে ফাইভার হলো একটি জনপ্রিয়
মার্কেটপ্লেস ৷ বিভিন্ন ধরনের কাজ বায়াররা এই মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে
ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে করিয়ে নিয়ে থাকে এবং ফ্রিল্যান্সাররা বায়ারদের কাজগুলো
এই মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে করে থাকে ৷
কিন্তু অনেকে আছে যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ শিখে এখানে কাজ করার পরেও সফল হতে পারেনা
৷ তাই আমরা যারা নতুন কাজ করতে চাই তাদের ফাইভারে সফলভাবে কাজ করার জন্য
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা প্রয়োজন ৷
পেজ সূচিপত্রঃ
ফাইভারে সফলভাবে কাজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
ফাইভারে সফলভাবে কাজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে
আমাদের প্রত্যেকের জেনে রাখা উচিত ৷ বিশেষ করে আমরা যারা ফাইভারে কাজ করতে
চায় সাধারণত তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে ৷
বর্তমান সময় ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যে সকল গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটপ্লেস রয়েছে
এগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং জনপ্রিয় একটি মার্কেটপ্লেস হলো ফাইভার ৷ কিন্তু
এখানে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে গেলে বেশ কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে
আপনাকে ধারণা রাখতে হবে ৷
- প্রথমত আপনাকে সম্পূর্ণ ও প্রফেশনাল সেলার প্রোফাইল তৈরি করতে হবে ৷ আপনারা যারা ফাইভারে কাজ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছেন এবং ফাইভারে কাজ করার জন্য যারা নতুন সাধারণত তাদের প্রথম কাজ হল সুন্দর এবং প্রফেশনাল একটি সেলার প্রোফাইল তৈরি করা ৷ আপনি যে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস দিয়ে থাকেন ফাইভারে প্রোফাইল তৈরি করার সময় অবশ্যই এই বিষয়গুলো আপনার প্রোফাইলে উল্লেখ করে দিতে হবে ৷ আপনার পার্সোনাল তথ্য দেওয়ার সময় আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং সার্টিফিকেট অনুযায়ী তথ্য পূরণ করতে হবে ৷
- অবশ্যই সঠিক গিগ টাইটেল ও ডেসক্রিপশন দিতে হবে ৷ আপনি যদি চান আপনার কাজের আবেদনগুলো সবার উপরের দিকে থাকুক তাহলে অবশ্যই আপনাকে আপনার আবেদনের সঠিক টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন আপনার প্রোফাইলে যুক্ত করতে হবে ৷ একটি কাজের জন্য ফাইভারে অসংখ্য মানুষ আবেদন করে থাকে সাধারণত সবার চাইতে আপনার আবেদনটি অবশ্যই ইউনিক হতে হবে ৷
- আপনার আবেদনটি আকর্ষণীয় করার জন্য গিগ তৈরি করার সময় ইমেজ ও ভিডিও যুক্ত করুন ৷ আপনি যদি আপনার আবেদনের মধ্যে কোন ধরনের ইমেজ অথবা ভিডিও যুক্ত করেন তাহলে আপনার আবেদনটি ইউনিক দেখাবে এবং সবার উপরে থাকবে ৷ যদি আপনার আবেদনটি সবার থেকেই ইউনিক হয় এবং সবার উপরের দিকে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার আবেদনটি বাইয়ারের চোখে সবার প্রথমে পড়বে ৷
- ডেসক্রিপশন এর মধ্যে সেরা ও সঠিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে ৷ সাধারণত আমরা ফাইভারের ডেসক্রিপশনে আমাদের বিভিন্ন ধরনের তথ্য দিয়ে থাকি । ডেসক্রিপশনে এই তথ্যগুলো দেওয়ার সময় অবশ্যই যে সকল সেরা কিওয়ার্ড রয়েছে ডেসক্রিপশনে সেগুলো যুক্ত করতে হবে । এই এ বিষয়ে কাজ করার সময় যেন কোনো ভুল না হয় সাধারণত সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।
- সোশ্যাল মিডিয়াতে গিগ প্রমোট করতে হবে । আমরা সকলেই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকি । আপনি যদি ফাইবারে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এখানে আবেদন করার পাশাপাশি এই আবেদন পত্র আপনার যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া রয়েছে বা আপনি যে সকল সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত রয়েছেন সেই সব সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে হবে । এতে করে আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে ।
- বেশিরভাগ সময় ফাইভারে অনলাইন থাকতে হবে । যদি অনলাইন না থাকা হয় তাহলে অনেক সময় বায়ার আপনাকে মেসেজ দেয় কিন্তু একটিভ না থাকার কারণে সেই মেসেজগুলো আপনি দেখতে পান না । সঠিক সময়ে বায়ারের সাথে কথা বলার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে বেশিরভাগ সময় অনলাইন থাকতে হবে ।
- কাজের কোয়ালিটি ও অন টাইম ডেলিভারি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে । যদি আপনি ফাইভারে একবারেই নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কাজের কোয়ালিটি অবশ্যই ভালো হতে হবে । যদি রেটিং ভালো পেতে চান তাহলে ওয়ান টাইম ডেলিভারি দেওয়ার চেষ্টা করবেন। অবশ্যই কাজ সম্পূর্ণ করার পরে ভালো করে চেক করে নেবেন এর পরে বায়ারকে কাজ জমা দেবেন এতে করে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা আরো বেড়ে যাবে ।
ফাইভারে ক্যারিয়ার গড়ার উপায়
এবার ফাইবারে ক্যারিয়ার গড়ার উপায় সম্পর্কে আপনাদেরকে জানানো হবে । আমাদের
অনেক চিন্তা থাকে যে আমরা ফ্রিল্যান্সিং শিখে ফাইভারে গিয়ে মাসে লাখ টাকা
উপার্জন করব । কিন্তু মুখে বললে আসলে এই বিষয়গুলো সম্ভব নয় অবশ্যই আপনাকে কাজ
করে দেখাতে হবে । ফাইভারে যদি আপনি আপনার নিজের ক্যারিয়ার করতে চান তাহলে
অবশ্যই আপনাকে বেশ কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে । যে বিষয়গুলো সম্পর্কে না
জানলে আপনি কখনোই ফাইবারে একটি ভালো প্রোফাইল ক্রিয়েট করতে পারবেন না এবং একজন
ভালো ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে পারবেন না ।
প্রোফাইল কমপ্লিট করতে হবেঃ
আপনি যদি ফাইভারে সফলতা পেতে চান এবং এখানে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান
তাহলে আপনার প্রোফাইল ১০০% কমপ্লিট করতে হবে । প্রোফাইলটি অনেক সুন্দর করে
সাজাতে হবে বিশেষ করে আপনার নামের নিচে অবশ্যই ট্যাগলাইন থাকে সেখানে আপনার যে
সকল অভিজ্ঞতা আছে এবং আপনি যে কাজগুলো ফাইবারে করতে ইচ্ছুক সেগুলো আপনাকে
সিরিয়াল বাই সিরিয়াল সাজাতে হবে । এরপর আপনার প্রোফাইল পিকচার অবশ্যই
প্রফেশনাল মানের হতে হবে । এরপরে ডেসক্রিপশন বক্সে নিজের সম্পর্কে এবং আপনি কোন
কোন বিষয়গুলোর উপর সার্ভিস দেন সেগুলো সম্পর্কে ডেসক্রিপশন বক্সে ভালোভাবে
লিখতে হবে ।
গিগ তৈরি করতে হবেঃ
ফাইভারে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য যে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে তার মধ্যে
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুন্দর করে গিগ তৈরি করা । এক্ষেত্রে আপনার
পর্যায়ে যারা রয়েছে সাধারণত তাদের চাইতে আপনাকে অনেক ভালো মানের গিগ তৈরি
করার চেষ্টা করতে হবে । গিগ আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য ইমেজ এবং ভিডিও
যুক্ত করুন । ইমেজ এবং ভিডিও যুক্ত করলে গিগ সবার উপরের দিকে থাকবে এবং
বায়ারের নজরে প্রথমে আপনার প্রোফাইলটি পড়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকবে ।
স্কিল টেস্ট করতে হবেঃ
ফাইভারে ক্যারিয়ার গড়তে হলে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে তার মধ্যে
অন্যতম আরেকটি বিষয় হলো স্কিল টেস্ট । সাধারণত আপনি কোন কাজে বেশি অভিজ্ঞ এবং
কোন কাজে আপনি দক্ষ এবং ভালোভাবে পারেন এই বিষয়টি আপনাকে জানতে হবে । আর এই
বিষয়গুলো জানার জন্য স্কিল টেস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
ফাইভার কোন ধরনের সাইট
ফাইভার কোন ধরনের সাইট? আমরা খুব ভালোভাবেই জানি । তবে আপনি যদি নতুন
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে থাকেন এবং ফাইভার কি বা ফাইভার কোন ধরনের
সাইট সে সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আপনার জন্য আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি ।
ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে অবশ্যই আপনাকে ফাইভার সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে ।
কারণ ফাইভার হল এক ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইট । সাধারণত
এই ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড বিভিন্ন ধরনের কাজ করানো হয়ে থাকে ।
দেশ অথবা দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন কোম্পানি বা বায়াররা
ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ করিয়ে নেই । সহজ ভাষায় বলতে
গেলে ফাইভার হল জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইট । যেখানে ডিজিটাল
মার্কেটিং থেকে শুরু করে গ্রাফিক্স ডিজাইন সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং
কাজ অর্থের বিনিময়ে বায়াররা করিয়ে নিয়ে থাকে । আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর
কোন একটি সেক্টরে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে সেই সেক্টর নিয়ে এই ফ্রিল্যান্সিং
মার্কেটপ্লেস গুলোতে প্রোফাইল ক্রিয়েট করার মাধ্যমে কাজ করতে পারবেন ।
ফাইভারে কাজ পাওয়ার উপায়
ফাইভারে সফলভাবে কাজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে আমরা
ইতোমধ্যেই ওপরে বিস্তারিত আলোচনা করে এসেছি । এখন বিষয় হচ্ছে যে আপনি যদি
ফাইভারে কাজ পেতে চান তাহলে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় অনুসরণ করতে হবে এবং সেই
অনুযায়ী কাজ করতে হবে । যারা স্ক্রিল ডেভেলপ করছে সাধারণত তাদের জন্য
ফাইভারে কাজ পাওয়া অনেকটাই সহজ । কিন্তু যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার রয়েছে
সাধারণত তাদের জন্য ফাইভারে কাজ পাওয়া অনেকটাই কঠিন ।
- যদি আপনি ফাইভারে কাজ পেতে চান তাহলে আপনার প্রথম করণীয় হবে একটি সুন্দর প্রোফাইল ক্রিয়েট করা । কিভাবে প্রোফাইল ক্রিয়েট করতে হয় সাধারণত এই বিষয়গুলো ইতোমধ্যে ওপরে আলোচনা করা হয়েছে । যদি প্রোফাইল ঠিক থাকে এবং প্রোফাইল সুন্দর করে সাজানো থাকে তাহলে অনেক বায়ার আছে যারা নতুনদের কাজ দিয়ে থাকে ।
- ফাইভারে কাজ পাওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল নিয়মিত অনলাইনে একটিভ থাকতে হবে । আমরা অনেকেই নিয়মিত অনলাইনে একটিভ থাকি না কিন্তু কাজ পাওয়ার আশা করি আসলে এটি বৃথা আশা ছাড়া আর কিছুই নয় । কারণ বায়াররা আমাদেরকে অ্যাক্টিভ না থাকার কারণে মেসেজ দিয়ে পায় না তখনই আমাদের কাজটি হাতছাড়া হয়ে যায় । তাই কাজ পাওয়ার জন্য অবশ্যই বেশিরভাগ সময় একটিভ থাকতে হবে ।
- একটি আকর্ষণীয় গিগ তৈরি করতে হবে । ফাইভারে কাজ পাওয়া অনেকটাই টাফ । তাই কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনপত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । আমরা যদি সঠিকভাবে আবেদন করতে পারি তাহলে অনেক সময় বায়াররা আবেদন পত্র দেখে খুশি হয়ে কাজ দিয়ে থাকে এবং এতে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। গিগ এমন ভাবে সাজাতে হবে যেন দেখতেও আকর্ষণীয় হয় । বিশেষ করে ইমেজ এবং ভিডিও যুক্ত করতে হবে । যাতে করে আবেদনটি প্রথম সারির দিকে থাকে ।
ফাইভারে কিভাবে কাজ করা যায়
ফাইভারে কিভাবে কাজ করা যায়? চলুন এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে এবার জেনে
নেওয়া যাক । আমরা ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি যে ফাইভার হল সকল
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইট ।
প্রতিটি ফ্রিল্যান্সারের স্বপ্ন থাকে ফাইভারে সফল হওয়া এবং সকল
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এ কাজ করা । এখন বিষয় হচ্ছে যে কিভাবে এই
ফাইভার মার্কেটপ্লেস এ কাজ করতে হয়? যারা মার্কেটপ্লেসে নতুন সাধারণত
তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ভালোভাবে জানা উচিত ।
ফাইভার সাধারণত সেলার এবং বায়ার এই দুই পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে । অর্থাৎ আপনি
যদি এই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে চান তাহলে আপনি এখানে একটি সেলার
একাউন্ট তৈরি করতে পারেন এবং এই একাউন্টের মধ্যে আপনি কোন কোন বিষয়ে কাজ করতে
চাচ্ছেন সেগুলো যুক্ত করতে পারবেন এবং কাজ করতে পারবেন । তাছাড়া আপনি যদি
ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে চান তাহলে একটি বায়ার প্রোফাইল
ক্রিয়েট করতে হবে যে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আপনি অন্যদেরকে দিয়ে আপনার কাঙ্খিত
কাজগুলো টাকার বিনিময়ে করিয়ে নিতে পারবেন ।
এই দুইটি একাউন্টের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় । যে সকল বায়ার
প্রোফাইল রয়েছে সাধারণত এগুলো ব্যবহার করা হয় ডিজিটাল সার্ভিস ক্রয় করার
জন্য । অন্যদিকে যে সকল সেলার অ্যাকাউন্ট গুলো তৈরি করা হয় যেকোনো ধরনের
ডিজিটাল সার্ভিস বিক্রয় করার জন্য । যখন আমরা ফাইভারে অ্যাকাউন্ট তৈরি
করি সাধারণত তখন আমাদের কাছে ফাইভার জানতে চাই যে আমরা বায়ার নাকি সেলার
কোন ধরনের অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করতে চাই? সাধারণত এভাবেই
ফাইভার মার্কেটপ্লেস কাজ করে ।
ফাইভারে গিগ তৈরি করার উপায়
ফাইভারে গিগ তৈরি করার উপায় আমরা যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার আছি অনেকেই জানিনা ।
আপনি যেহেতু ফাইভারে কাজ করতে চাচ্ছেন সেহেতু গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো গিগ
। সহজ ভাষায় বলতে গেলে গিগ হল মূলত এক ধরনের সার্ভিস বা পরিষেবা । একজন
ফ্রিল্যান্সার ফাইভারের মাধ্যমে তার সার্ভিস গুলো বিক্রয় করার জন্য যে
সুবিধাগুলো প্রদান করে থাকে এবং কতদিনের মধ্যে ও কত টাকার বিনিময়ে কাজ করে এই
তথ্যগুলো সাবমিট করা হয় যার মাধ্যমে সাধারণত এটিকেই গিগ বলা হয় ।
ফাইভার মার্কেটপ্লেসে আপনি যদি কাজ পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটি সুন্দর
মানের গিগ সাজাতে হবে । আর এই গিগ তৈরি করার জন্য বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায়
রাখতে হবে । আপনার যতগুলো দক্ষতা রয়েছে সবগুলো দিয়েই একটি ভাল মানের গিগ তৈরি
করার চেষ্টা করুন ।
- কম্পিটিটর অ্যানালাইসিস
- সবার চাইতে আলাদা অর্থাৎ ইউনিক ডেস্ক্রিপশন যুক্ত করতে হবে।
- আকর্ষণীয় গিগ তৈরি করার জন্য ইউনিক এসইও পূর্ণ টাইটেল দিতে হবে
- গিগের প্যাকেজ যুক্ত করতে হবে।
- ভালো দেখে একটি থাম্বেল গিগের জন্য যুক্ত করতে হবে।
- একটি সুন্দর গিগের ট্যাগ যুক্ত করতে হবে।
- যদি ভিডিও যুক্ত করা যায় তাহলে আরো ভালো হয়।
ফাইভারে বায়ার কে খুশি করার উপায়
ফাইভারে সফলভাবে কাজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে এগুলো জানার
পাশাপাশি কিভাবে আমরা আমাদের বায়ারকে খুশি করতে পারি এ বিষয়গুলো সম্পর্কেও
জেনে রাখতে হবে । কারণ বায়ারকে খুশি করতে পারলে পরবর্তীতে একই বায়ার থেকে আরো
কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে । বিশেষ করে আমাদের কাজ দিয়ে যদি আমরা বায়ারকে
খুশি করতে পারি তাহলে বায়ার আমাদের প্রোফাইলে ভালো রেটিং দেবে।
ফাইভারে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য ভালো মানের প্রফাইল রেটিং খুবই
গুরুত্বপূর্ণ । এতে করে অন্য বায়াররা আপনার প্রোফাইল দেখে বুঝতে পারবে যে আপনি
আগের বাইয়ার কে কত ভালো কাজ করে দিয়েছেন । তাই বায়ারকে খুশি করার উপায় গুলো
জানা উচিত ।
কাজ সম্পর্কিত প্রশ্ন করতে হবেঃ
অনেক সময় আমরা অতি উৎসাহী হয়ে কোন কিছু প্রশ্ন না করে বা্রেযার থেকে কাজ জমা
নিয়ে কাজ শুরু করে দেয় যার ফলে কাজে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা দেয় । এ
বিষয়টি থেকে বের হয়ে আমাদেরকে যে কাজ বায়ার দিয়েছে সাধারণত সেই কাজ
সম্পর্কিত যে সকল বিষয় রয়েছে সে বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করতে হবে এবং
জানতে হবে ।
বায়ারের বিজনেস এবং সার্ভিস সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবেঃ
আপনার বায়ার আপনাকে যে কাজে দিয়েছে সাধারণত তার বিজনেস এবং সার্ভিস কোন ধরনের
এ বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে নিবেন । কারণ আপনি যদি তার বিজনেস সম্পর্কিত
বিষয়গুলো না জানেন বা ধারণা লাভ না করেন তাহলে কখনোই আপনি বায়ারকে একটি ভালো
কাজ করে দিতে পারবেন না ।
আগে এই কাজটি কেউ করেছে কিনা এই বিষয়ে জানতে হবেঃ
আপনার আগে কেউ এই কাজটি করেছে কিনা অবশ্যই বায়ারকে এটি জিজ্ঞেস করে নেবেন ।
যদি করে থাকে তাহলে তিনি কেন আবার নতুন করে আপনাকে এই কাজটি করাতে চাচ্ছে বা
আপনার থেকে করিয়ে নিতে চাচ্ছে তার কোন জিনিসটি পছন্দ হচ্ছে না এবং কাজটি
কিভাবে করলে তার পছন্দ হতে পারে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে অবশ্যই জানা উচিত ।
তার কম্পিটিটর সম্পর্কে জানতে হবেঃ
আপনার বায়ারের যে সকল কম্পিটিটর রয়েছে সাধারণত তাদের সম্পর্কে জানতে হবে ।
আমরা সকলেই জানি যে বর্তমান সময় হলো প্রতিযোগিতার সময় । আমরা যদি
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারি তাহলে কখনো একটি সফল ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে
পারবো না । তাই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে অবশ্যই আমাদেরকে প্রতিযোগির চাইতে ভাল
কাজ করতে হবে ।
ওয়ান টাইমে কাজ জমা দিতে হবেঃ
বায়ার আপনাকে যে সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন এ সময়ের মধ্যে কাজ জমা দেওয়ার
চেষ্টা করবেন । অনেক সময় আমরা কাজ করতে দেরি করি যার ফলে বায়ার ও খুশি হয় না
এবং আমাদের রেটিং ও কমিয়ে দেয় । তাই যতটুকু সম্ভব হয় বায়ারের দেওয়া সময়ের
আগেই বায়ারকে কাজ জমা দিয়ে দিন । এতে করে বায়ারও খুশি হবে এবং আপনাকে আরো কাজ
দেবে এবং আপনার প্রোফাইল রেটিং ও ভালো দেবে যা আপনাকে পরবর্তীতে অন্য বায়ারদের
কাছে থেকে কাজ পেতে সহায়তা করবে ।
ফাইভারে ইম্প্রেশন ক্রিয়েট করার উপায়
অনেকেই জানেন না যে ফাইভার ইম্প্রেশন কি? ফাইবারে ইম্প্রেশন ক্রিয়েট করার
উপায় কি? কিভাবে গিগ তৈরি করতে হয় সাধারণত এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো
সম্পর্কে আমরা ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি । সাধারণত ফাইভার মার্কেটপ্লেস
একাউন্টে কাজ পাওয়ার জন্য আমরা যেই গিগ তৈরি করি সেখানে যদি সঠিক ইম্প্রেশন না
আসে তাহলে কখনোই কাজ পাওয়া সম্ভব নয় । যদি আপনি সঠিক পরিমাণ কাজ পেতে চান
তাহলে অবশ্যই আপনাকে ইম্প্রেশন এর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে ।
- গিগ তৈরি করার সময় এর টাইটেল গুলো যেন এসিও ফ্রেন্ডলি হয় অবশ্যই এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। তাছাড়া ইউ আর এল ও এসিও ফ্রেন্ডলি হতে হবে ।
- সাধারণত আমরা যে সার্ভিসগুলো প্রদান করব সেই বিষয়ে যে সকল কিওয়ার্ড রয়েছে সেগুলো নিয়ে আমাদের প্রথমে ভালোভাবে রিসার্চ করে নিতে হবে ।
- গিগ তৈরি করার সময় ইমেজ অথবা ভিডিও প্রোফাইলে যুক্ত করতে হবে এর ফলে বায়ারের ইম্প্রেশন বাড়বে ।
- সুন্দর ও এসইও ফ্রেন্ডলি কিওয়ার্ড ব্যবহার করার পাশাপাশি অবশ্যই রিলেটেড কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে ।
- নিজের প্রয়োজনে প্রথম অবস্থায় প্রোফাইলে নিজের কাজের দাম কমিয়ে রাখতে হবে । পরবর্তীতে যদি রেটিং বৃদ্ধি পায় সাধারণত তখন কাজের দাম আস্তে আস্তে বাড়াতে হবে ।
ফাইভার গিগ র্যাঙ্ক করার উপায়
অনেকেই ফাইভার গিগ র্যাঙ্ক করার উপায় জানতে চাই । সাধারণত আমরা ইতোমধ্যে
উপরে জানতে পেরেছি যে ফাইভার হলো বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় একটি
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইট । ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন ধরনের কাজ
ফাইভার মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে করা যায় এবং কাজ করিয়েও নেওয়া যায়।
ফাইভার একাউন্টে কাজ পাওয়ার জন্য আমরা ফাইভারে গিগ তৈরি করে থাকি
কিন্তু কিভাবে গিগ র্যাঙ্ক করানো যায় সাধারণত এই বিষয়টি আমাদের অনেকেরই
জানা নেই । তাহলে চলুন ফাইভার একাউন্টে কাজ পাওয়ার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ।
- ফাইভারে গিগে এসইও করতে হবে । আমরা জানি যে, যে কোন আর্টিকেলকে র্যাঙ্ক করানোর জন্য এসইও কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গিগ তৈরি করার সময় অবশ্যই এসইও ফ্রেন্ডলি কিওয়ার্ড খুঁজে বের করে গিগ তৈরি করতে হবে।
- ফাইভার গিগ র্যাঙ্কে আনতে হলে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গিগে ইমেজ ও ভিডিও যুক্ত করতে হবে । আমরা ইতোমধ্যে আর্টিকেলটিতে উল্লেখ করেছি যে ইমেজ এবং ভিডিও যুক্ত করলে গিগ এর ইম্প্রেশন বায়ারের কাছে অনেক বাড়ে এবং বায়ার যদি আপনার প্রোফাইলটি দেখে ইম্প্রেসড হয় বা খুশি হয় তাহলে আপনাকে কাজটি দিতে পারে ।
লেখকের শেষ কথা
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ফাইভারে সফলভাবে কাজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলাম । পরবর্তীতে ফাইভার সম্পর্কে আরো যে সকল
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল প্রায় সবগুলোই আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আলোচনা করা
হয়েছে । আপনি যদি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে চান এবং জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং
মার্কেটপ্লেস ফাইভারে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে চান তাহলে আপনার
উচিত ফাইভার সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া । তাছাড়া এখানে কিভাবে
আপনি সফল হতে পারবেন সাধারণত এই বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে ।
ফাইভার এর মতো আরো অনেক জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনি
একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে পারেন যেমন, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ও ইত্যাদি । আশা করছি
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি ফাইভার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
পেরেছেন । এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ । এই ধরনের
গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক বিষয় নিয়মিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট
করতে পারেন ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url